মধু দিয়ে রূপচর্চা
প্রিয় পাঠক বন্ধু আপনি কি মধু দিয়ে রূপচর্চা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই। কারণ, এই আর্টিকেলের মূল আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ত্বক ও চুলের যত্নে মধুর ব্যবহার।
এছাড়াও মধু কিভাবে ব্যবহার করবো, এর উপকারিতা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই ত্বক ও চুলে মধুর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অনুরোধ রইলো।
পেজ সূচিপত্রঃ মধু দিয়ে রূপচর্চা
- ত্বক ও চুলের যত্নে মধুর উপকার
- মধু দিয়ে মাত্র পাঁচদিনে ত্বক করুন উজ্জ্বল!
- ছোট্ট কিছু টিপস
- লেখিকার শেষ কথা
ত্বক ও চুলের যত্নে মধুর উপকার
ত্বক ও চুল নারীর সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ। তাই আমরা মেয়েরা ত্বক ও চুলের যত্নে অলসতা করি না। বরং আরও উদ্দীপ্ত থাকি সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য। ত্বক ও চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য অনেক কিছু ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু ত্বক ও চুলের যত্নে মধুর ব্যবহার অনেকেই জানি না। তবে এবার না জানা কিছুই থাকবে না।
হ্যাঁ বন্ধুরা ত্বক ও চুলের যত্নে মধুর ব্যবহারে রয়েছে ব্যাপক উপকারিতা। তাহলে আর বেশি কথা না বাড়িয়ে আসল কথায় আসি।
চলুন তাহলে জেনেনি, ত্বক ও চুল সুন্দর রাখতে মধুর উপকার।
এছাড়াও আর একটি মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন মুখে। ৩ ভাগ মধু ও এক ভাগ দারুচিনি মিশিয়ে মাইক্রোওয়েভ ওভেনে অথবা চুলাই সামান্য গরম করে নিন। যতটুকু ত্বকে সহনীয় লাগে ঠিক ততটুকু গরম করুন। এবার মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে নিন তুলে অথবা কটন ব্যাড এর সাহায্যে। ৮-১০ মিনিট পর মিশ্রণটি কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের চুলকানি, ত্বকের জ্বালাপোড়া ও ব্রনের সমস্যা দূর করবে।
ত্বক করে উজ্জ্বলঃ ১ চা-চামচ মধু , ১ চা-চামচ টকদই ও সামান্য পরিমাণ লেবুর রস ( যদি কারো এলার্জির সমস্যা থাকে তবে তারা লেবুর রস ব্যাড দিতে পারেন ) মিশিয়ে ফেইস ব্রাশ দিয়ে মিশ্রণটি মুখে, গলায়, ঘাড়ে, হাতে, পায়ে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক হবে উজ্জ্বল।
এছাড়াও প্রয়োজন মতো মধু এ কাঁচা হলুদ কিংবা মধু ও সামান্য গোলাপজল মিশিয়ে মুখে মেখে ১০-১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বক আপনাতেই উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
ত্বকের কালো দাগ দূর করতেঃ ১ চা-চামচ মধুর সঙ্গে ১ চা-চামচ অলিভ অয়েল অথবা নারিকেল তেল মিশিয়ে নিন। ত্বকের যে স্থানে দাগ চিহ্ন আছে সেখানে মিশ্রণটি লাগিয়ে নিন। ১-২ মিনিট হাত ঘুরিয়ে মালিশ করতে থাকুন। এবার ত্বকে গরম তোয়ালে অথবা সুতি কাপড় চেপে ধরে রাখুন যতক্ষণ পর্যন্ত জায়গাটা ঠান্ডা না হচ্ছে। নিয়মিত ব্যবহার করুন ভালো ফলাফল পাবেন ইনশাআল্লাহ্।
রোদে পোড়া ভাব কমাতেঃ প্রয়োজন মতো মধুর সঙ্গে অ্যালোভেরার মিশ্রণ তৈরি করে রোদে পুড়ে যাওয়া স্থানে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে আসলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে ইনশাআল্লাহ্ রোদে পোড়া ভাব কমে আসবে।
লোমকূপে জমে থাকা ময়লা দূরীকরণেঃ ১ চা-চামচ মধুর সঙ্গে ২ চা-চামচ নারকেল অথবা জজবা তেল ভালভাবে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি চোখের চারপাশের ত্বক বাদ দিয়ে পরিষ্কার শুষ্ক ত্বকে লাগিয়ে হালকা করে ম্যাসাজ করুন। লাগিয়ে রাখা মিশ্রণটি শুকিয়ে গেলে হাল্কা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক এ লোমকূপের গভীরে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করবে এবং ত্বকও করবে উজ্জ্বল।
শুষ্ক ঠোঁটের জন্যঃ প্রতিদিন একবার করে ১ ফোঁটা মধু আঙ্গুল অথবা কটন ব্যাড এর সাহায্যে ঠোঁটে লাগিয়ে নিন। ১০-১৫ মিনিট পর কুসুমগরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ফেসিয়াল মাস্কঃ ১ চা-চামচ মধু ও ১ চা-চামচ ওটস ( ওটস বাসাই না থাকলে এর পরিবর্তে চালের গুঁড়ো ব্যবহার করতে পারেন ) মিশিয়ে মুখে ভালভাবে লাগিয়ে নিন। এরপর হাল্কা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ফেসিয়াল মাস্কটি আপনার ত্বককে করবে সুন্দর, মরাকোষ গুলোকে পরিষ্কার করবে ও ব্ল্যাকহেডস দূর করবে।
গোসলে মধুঃ ১ কাপ গরম পানিতে ২ চা-চামচ মধু মিশিয়ে নিয়ে বালতির পানিতে ঢেলে গোসল করুন। এতে ত্বক থাকবে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত।
চুলের কন্ডিশনারঃ ১ চা চামচ মধুর সঙ্গে ২ চা চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে গোসল করার ২০ মিনিট পূর্বে চুলে ভালো মতো লাগিয়ে রাখুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল করবে উজ্জ্বল।
চুল রং করতে মধুঃ চুল রং করা বর্তমান সময়ে ফ্যাশনে দারুন জনপ্রিয়। তাই ৩ চা-চামচ মধুর সঙ্গে ১ চা-চামচ পানি মিশিয়ে গোসলের ১ ঘন্টা পূর্বে লাগিয়ে রাখুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহার করলে ফলাফল পাওয়া যাবে।
মধু দিয়ে মাত্র পাঁচদিনে ত্বক করুন উজ্জ্বল!
আপনি চাইলে মাত্র পাঁচদিনেই মধু দিয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে পারবেন। চলুন তাহলে জেনে নিই, মাত্র পাঁচদিনে উজ্জ্বলতা বাড়াতে মধুর প্যাক।
মধু ও কলার প্যাকঃ এই প্যাকটি ত্বকের কালচে ভাব দূর করে। ১ চা-চামচ মধুর সঙ্গে সামান্য পরিমাণ পাকা কলা মিশিয়ে নিয়ে প্যাক তৈরি করে প্যাকটি ভালভাবে লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট পর কুসুমগরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মধু ও পেঁপেঃ ২ চা-চামচ মধুর সঙ্গে ২ টুকরো পাকা পেঁপে মিশিয়ে ঘন প্যাক তৈরি করে ভালো ভাবে লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি বয়সের ছাপ দূর করতেও সাহায্য করে।
মধু ও লেবুর রসঃ ১ চা-চামচ মধুর সঙ্গে ১ চা-চামচ লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে ২০ মিনিট ধরে মুখে ম্যাসাজ করুন। ২০ মিনিট রেখে দিন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক হবে উজ্জ্বল।
মধু, গোলাপজল ও হলুদের গুড়োঃ ১ চা-চামচ মধু, কয়েক ফোঁটা গোলাপজল ও সামান্য হলুদ গুঁড়ো ভালোভাবে মিশিয়ে মুখ লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন। ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল।
মধু ও টকদইঃ ১ চা-চামচ মধুর সঙ্গে ১ চা-চামচ টকদই মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট পর কুসুমগরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেশ কার্যকর। আবার এই প্যাকটি ব্রণ দূর করতেও ব্যবহার করা যাবে।
ছোট্ট কিছু টিপস
- মধু খাঁটি হলে ভালো হয়।
- মধু বাবহারে যেমন উপকার আছে । তেমনি কিছু সাবধানতা আছে । চলুন তাহলে জেনে নিই, ছোট্ট কিছু টিপস।
- মধুতে এল্যার্জি থাকলে অবশ্যই তা পরিহার করুন।
- যাদের মৌমাছির মধুতে এল্যার্জি আছে তারা ফুলের মধু ( যে ফুলে আপনার এল্যার্জি নেই ) ব্যবহার করতে পারেন।
- মধু ত্বকে ব্যবহার এর পাশাপাশি খেতে পারলে বেশ উপকার হয়।
- মধু পরিষ্কার কৌটায় সংরক্ষন করবেন।
- ফ্রিজে রাখার প্রয়োজন নেই।
লেখিকার শেষ কথা
প্রিয় পাঠক বন্ধু আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাদের রূপচর্চায় মধুর ব্যবহার, উপকারিতা ইত্যাদি বিষয়ে জানিয়েছি।
এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসখ্য ধন্যবাদ। এই ধরণের আর ও আর্টিকেল পড়তে চান তাহলে নিয়মিত আমদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আশা করি আপনাদের জন্য অনেক উপকার হবে।
ফাইজা ৩৬৫ ব্লগের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url